একলোক কাজের জন্য রাজার কাছে আসলো
একলোক কাজের জন্য রাজার কাছে আসলো
একদিন এক লোক রাজদরবারে এসে রাজাকে বললো মহারাজ আমাকে একটা কাজ দেন। রাজা তাকে বললেন তুমি কি কাজ জানো। লোকটা বললো মহারাজ আমি তিন দিন কারো সাথে থাকলে বলে দিতে পারি তার বংশের পরিচয় কি।
রাজা বললেন ঠিক আছে আমি প্রথমে তোমার একটা পরীক্ষা নিতে চাই আমার একটি ঘোড়া আছে তোমাকে বলতে হবে এই ঘোড়াটা কোন বংশের। লোকটা বলল ঠিক আছে আমাকে তিন দিনের সময় দেন।
এদিকে ঘোড়াটা ছিল রাজার অনেক প্রিয় এবং অনেক টাকা দিয়ে কিনা। তিনদিন পর লোকটিকে ডাকা হল এবং জিজ্ঞেস করা হলো ঘোড়াটা কোন বংশের।
লোকটা বললো মহারাজ মাফ করবেন আপনার ঘোড়াটি গরুর বংশের ও আচরণ গরুর মতো। তার কথায় রাজা রাগান্বিত হলেন। সে বললো মহারাজ যার কাছ থেকে ঘোড়াটি ক্রয় করেছেন তাকে ডাকেন যদি আমার কথা সত্য না হয় তাহলে আমাকে যে শান্তি দেবেন তা আমি মেনে নিবো।
ডাকা হলো ঘোড়ার আগের মালিকে। মালিক আশার পর জিজ্ঞেস করা হলো। মালিক বললো মহারাজ আমাকে মাফ করবেন এই ঘোড়া টার যখন জন্ম হয় তখন তার মা মারা যায়। তার পর আমি তাঁকে গরুর সাথে
রাকি এবং গরুর দুধ খেয়ে সে বড় হয়।
হুজুর আমাকে ক্ষমা করে দেন। রাজা তাঁকে মাফ করে দেন। আর ঐ লোকটা জিজ্ঞেস করলেন তুমি কিভাবে বললে। এটা গরুর বংশের তখন লোকটা বললো মহারাজ গরু ঘাস খায় নিচের দিকে মাথা দিয়ে।
আর ঘোড়া ঘাস খায় উপরের দিকে মাথা দিয়ে। অর্থাৎ নিচ থেকে গাছ উঠিয়ে মাথা উপরের দিকে তুলে খাবে। এই ঘোড়াটি গরুর মতো মাথা নিচু রেখে ঘাস খায়। এটা দেখে আমি বুঝতে পারছি এই ঘোড়াটি গরুর সাথে বড় হইছে।
রাজা খুশি হয়ে তাকে দশটা ছাগল দশটা ভেড়া দশটা মুরগি উপহার দিলেন। এবং রাজা তাকে গোপনে নিয়ে বললেন তুমি গোপনে আমাকে একটি কাজ করে দাও আমার বউ কোন বংশের আমাকে একটু বলে দাও।
সে বললো আমাকে তিন দিনের সময় দিন। তিন দিন পর এসে রাজাকে বললো মহারাজ আমাকে মাফ করবেন। রাজ মাতা মনে হয় কোন চাকর বাকরের বংশের। রাজবংশের বলে আমার মনে হয় না। রাজা রাগান্বিত হলেও তাকে বুঝতে দিলেন না।
রাজা চলে গেলেন তার শাশুড়ীর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন শাশুড়ী আম্মা আপনার মেয়েকি আপনার না। রাজার শাশুড়ী রাজাকে বললেন বাবা আমাকে ক্ষমা কর। তোমার বাবার সাথে তোমার শশুড়ের ওয়াদা ছিল আমার মেয়েকে তোমার সাথে বিয়ে দিবে।
কিন্তুু আমার মেয়ে হটাৎ ডায়রিয়া হয়ে মারা যায়। তার পর আমি আমার কাজের মেয়ের মেয়েটাকে পালক নেই। এবং তাকে নিজের মেয়ের মতো লালনপালন করি। এবং তোমার সাথে বিয়ে দিয়ে দেই।
রাজা সবকিছু মেনে নেয় এবং ঐ লোকের কাছে চলে আসে এসে তাকে জিজ্ঞেস করে কিরে তুমি কিভাবে বুঝতে পারলে আমার বউ যে চাকরের বংশের। সে বললো মহারাজ আমি তিন দিন ধরে দেখছি রাজ মাথা চাকর বাকরের সাথে খালি খারাপ ব্যবহার করে। উনার মাঝে কোন রাজবংশের ব্যবহার আমি পাইনি।
রাজা খুশি হয়ে তাকে বিশটি গরু উপহার দিলেন। এবং তাকে বললেন আচ্ছা এখন বলতো দেখি আমি কোন বংশের। সে বলে হুজুর আপনার জন্য তিন দিন সময় লাগবে না। আমি এই কয়েক দিনে খেয়াল করে দেখেছি আপনি কোন রাজবংশের কেউ না।
রাজা সোজা তার মায়ের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন মা আজকে আমাকে একটা সত্য কথা বলো। মা বললেন কি কথা রাজা বললেন আমি কি তোমার সন্তান মা বললেল না বাবা। আমি নিসন্তান তোমার বাবা পাশের রাজ্যের রাজার সাথে কথা দিয়েছিলেন উনার মেয়ে সাথে তার ছেলের বিয়ে দিবেন।
তাই আমি এক কৃষকের ছেলে পালক নিয়ে ছিলাম আর সেই ছেলে তুমি। রাজা অবাক হয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে দুই ফুটা চোখ পানি ফেলে। তার পর দৌড়ে গিয়ে ঐ লোকে জিজ্ঞেস করে ভাইরে তুই কিভাবে বুঝতে পারলে আমি রাজ বংশের কেউ না।
লোকটা বললো মহারাজ মাফ করবেন। রাজা বাদশারা খুশি হলে সোনা দানা উপহার দেয়ে আর আপনি খুশি হলে গরু ছাগল বেড়া মোরগ উপহার দেন। তাই আমি বুঝতে পারছি আপনি কোন রাজ বংশের কেউ না। আপনি কৃষকের বংশের।