উস্তাদ ও ছাত্র দুজন ফাঁশির জন্য প্রস্তুত।

 উস্তাদ ও ছাত্র দুজন ফাঁশির জন্য প্রস্তুত।



ওস্তাদ গেছেন ছাত্র গেছে একটি দেশ সফর করতে। তারা ঐ দেশের বাজারে গিয়ে দেখেন তেল এবং ঘি দুটোর দাম সমান। ওস্তাদ ছাত্রকে বলেন চল বাবা এই দেশে আর থাকবো না ছাত্র বলে কেন ওস্তাদ।

ওস্তাদ বলেন যে দেশে ঘি ও তেলের দাম সমান সে দেশে নিয়েআয়  বিচার নাই। ছাত্র বলে হুজুর আমার মন চায় এদেশে   কিছুদিন  থাকতে। উস্তাদ বলেন আচ্ছা ঠিক আছে তুমি থাকো আমি  চলে যাচ্ছি। এই বলে উস্তাদ চলে গেলেন

ছাত্র ঐ দেশে রয়ে গেলো এবং সে তেলের পরিবর্তে ঘি দিয়ে তরকারি রান্না করে খেতো। এ দিকে ঐ দেশের বাদশার রাজদরবারে ঘটে গেলো একটি ঘটনা, এক চোর রাজদরবারে চুরি করতে গিয়ে মাটি খুঁড়ে উপরে উঠার সময় দেওয়ালের ইট খুলে চোরের মাথায় পড়ে চোর মারা গেছে।

বাদশা রায় দিলেন যে রাজমিস্ত্রী এই দেওয়াল তৈরি করেছে তার ফাঁশি রায়। ফাঁশির কারণ দেখানো হলো রাজমিস্ত্রী দেওয়ালে মাসল্লা কম দিয়েছে। এজন্য ইট খুলে পড়েছে চোরের মাথায়। আর চোর মারা গেছে।

রাজমিস্ত্রীকে হাজির করা হলো, রাজমিস্ত্রীরি হাজির হয়ে ঘটনা শুনে বললো মহারাজ আমি মসল্লা তৈরি করি নাই। মসল্লা তৈরি করেছে আমার হেল্পার। আমার হেল্পার মসল্লা তৈরি করার সময় মনে হয় পানি বেশি দিয়েছে।এজন্য ইট খুলে পড়েছে আর চোর মারা গেছে।

বাদশা বললেন তাহলে তুমি খালাস তোমার হেল্পারের ফাঁশির রায়। হেল্পার কে হাজির করা হলো হেল্পার হাজির হয়ে ঘটনা শুনে বললো মহারাজ আমি যখন মসল্লা তৈরি করি এ সময় একজন হাতি ওয়ালা হাতি নিয়ে যাচ্ছেছিল। আর আমি হাতির দিকে তাকিয়ে ছিলাম। এই সময় মনে হয় মসল্লাতে পানি বেশি পড়েছে ।

মহারাজ হাতি ওয়ালা যদি এ সময় হাতি নিয়ে আসতো না তাইলেতো আমি মসল্লায় পানি বেশি দিতাম না আর এ ঘটনা ঘটতো না। বাদশা বললেন তাহলে তুমি খালাস ঐ হাতিওয়ালার ফাঁশি রায় করা হলো।

হাতিওয়ালাকে হাজির করা হলো এবং ঘটনা বলা হলো ঘটনা শুনে হাতি ওয়ালা বললো মহারাজ আমার হাতি নীরবে চলতে পারে। কিছু দিন আগে আমি এক কামারের কাছ থেকে একটি ঘন্টা এনে হাতির গলায় দিয়েছি। কামার ঘন্টার মধ্যে এমন বেশি আওয়াজ দিয়েছে হাতি যে দিকে যায় ঐ দিকের লোকজন হাতির দিকে তাকিয়ে থাকে।

কামার যদি ঘন্টায় আওয়াজ বেশি দিতো না তাহলে রাজমিস্ত্রীর হেল্পার হাতির দিকে তাকাতো না আর পানি ও বেশি দিতো না আর এই ঘটনা ঘটতো না। দুশতো করেছে ঐ কালার। হাতিওয়ালার কথা শুনে বাদশাহ বললেন তুমি খালাস। ঐ কামারের ফাঁশির রায় তাকে ফাঁশি দেওয়া হোক।

হাজির করা হলো কামারকে। কামার ঘটনা শুনে কোনো কিছু বলার সাহস পেলো না। তাকে নিয়ে যাওয়া হলো ফাঁশির মঞ্চে। এদিকে কামার সারা দিন আগুনের কাছে থাকতে থাকতে তার শরীর একবারে শুকিয়ে গেছে। ফাঁশির রশি তার গালায় কোনো ভাবে আটকে না

এ খবর বাদশার কাছে যাওয়ার পর বাদশা বললেন তাকে ছেড়ে দিয়ে এই রশির মাপে যার গলা পাবে তাকে ফাঁশি দিয়ে দাও। অনেক খুজার পর পাওয়া গেলো একজন কে তার গলা ও ঘাড় অনেক মুটা তাকে ধরে নিয়ে আসা হলো বাদশার দরবারে।

সে জিজ্ঞেস করলো আমার ফাঁশি রায় কেনো উজির বললো তোমার ঘাড় মুটা এজন্য। এদিকে ঘাড় মুটা ছেলেটা ছিলো ঐ উস্তাদের রেখে যাওয়া ছাত্র। এ সময়
ছাত্ররের মনে পড়ে গেল তার উস্তাদের কথা।

সে বললো আমার শেষ একটা ইচ্ছা ছিল। বাদশা বললেন কি তোমার ইচ্ছা সে বললো আমার একজন উস্তাদ আছেন ঐ দেশে আমি শেষ বারের মতো উনার সাথে  দেখা করতে চাই।

তার শেষ ইচ্ছা পূরণ করার জন্য তার উস্তাদের কাছে নিয়ে যাওয়া হলো। সে গোপনে তার উস্তাদকে সব কিছু বললো। উস্তাদ বললেন আমি তোমারে বলেছিলাম তুমি আমার কথা শুনলে না। আচ্ছা যাইহোক এখন আমি যা বলি তুমি তাই করবে।

তারা দুজন চলে আসলেন বাদশার দরবারে এসে উস্তাদ বলে আমাকে ফাঁশি দেন আর ছাত্র বলে আমাকে ফাঁশি দেন। এ ভাবে দুজন মারামারি শুরু করলো তাদের এ অবস্থা দেখে বাদশা বলে একজন লোক পাইনা ফাঁশি দেওয়া জন্য আর তুরা দুজন পাগল হয়ে গেলি ফাঁশির রশি গলায় পরার জন্য। কারণ টা কি

তখন তারা দুজন বললো গত রাতে আমরা সপ্নে দেখেছি যে এই ফাঁশির  রশিতে লাগিয়া মারবে সে সরাসরি জান্নাতে চলে যাবে। বাদশা বলে ও আচ্ছা এ ঘটনা আমার সামনে তুরা জান্নাতে চলে যাবে আর আমি  বসে বসে দেখবো এটা কি হয়। 
বাদশা জল্লাদ কে বলে এই জল্লাদ আমাকে তাড়াতাড়ি ফাঁশির রশিতে জোলা আমি জান্নাতে যেতে চাই। জালিম বাদশাকে ফাঁশি রসিতে ঝুলিয়ে। উস্তাদ ও ছাত্র তারা দুজন তাদের দেশের চলে গেলেন।

উস্তাদ ছাত্ররকে বললেন আমি জালিমের হাতে থেকে ঐ দেশকে রক্ষা করার জন্য তোমাকে রেখে আসছিলাম।
আর আমি  আগে থেকে জানতাম এ রকম ঘটনা ঘটবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url