শহরের বন্ধু ও গ্রামের বন্ধু

শহরের বন্ধু ও গ্রামের বন্ধু 




তারা ছিলেন দুই বন্ধু একসাথে লেখা পড়া খেলাধুলা করতেন। একজনের বাবা সরকারি চাকরি করতেন। হঠাৎ সরকারি চাকরিজীবির বাবার বদলির আদেশ আসে এবং তিনি পরিবার নিয়ে শহরে চলে যান।


প্রায় ৩০ বছর পর দুই বন্ধুর দেখা, দুজনের মধ্যে কুশল বিনিময় হলো। তার পর শহরের বন্ধু গ্রামের বন্ধুকে বাসায় নিয়ে গেলেন, এবং অনেক আদর সমাদর করলেন। গ্রামের বন্ধু শহরের বন্ধু চেয়েও কোনো অংশে কম নয়। তিনি বিশাল সম্পদশালী। 


গ্রামের বন্ধু শহরের বন্ধুকে বললেন তুমি কোন দিন যাবে আমার বাড়ীতে তোমার ফ্যামিলির সবাইকে নিয়ে। শহরের বন্ধু বললেন আচ্ছা সময় করে একদিন যাবো। গ্রামের বন্ধু বললেন আচ্ছা ঠিক আছে। আবার জিজ্ঞেস করলেন তোমার ছেলে মেয়ে কয়জন। 


শহরের বন্ধু বললেন আমার একছেলে, এবার শহরের বন্ধু  জিজ্ঞেস করলেন তোমার ছেলে মেয়ে কয়জন, গ্রামের বন্ধু বললেন আমার এক মেয়ে। শহরের বন্ধুর বউ বলে উঠলেন তাইলে তো ভালো হইছে। আপনার একজন আরেক জন কে বেয়াই বানিয়ে ফেলেন। পুরানা সম্পর্ক ঠিক থাকবে। 


দুজন রাজি হয়ে  গ্রামের বন্ধু বললেন ঠিক আছে তোমার ছেলে কোথায়, এদিকে শহরের বন্ধুর ছেলে ছিল বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। তাই শহরের বন্ধু চালাকি করে বললেন সে বাহিরে গেছে। আচ্ছা সে বাসায় আসুক আশার পর আমি তোমার ঠিকানা দিয়ে তাকে পাঠিয়ে দিবো তোমার বাড়ীতে। 


গ্রামের বন্ধু বললেন আচ্ছা ঠিক আছে  এখন আমি যাই, এই বলে তিনি চলে গেলেন। কিছু দিন পর শহরের বন্ধু খবর পেলেন তার গ্রামের বন্ধু খুব বেশি অসুস্থ। এই খবর পেয়ে শহরের বন্ধু মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলেন এই সুযোগে তার ছেলেকে পাঠিয়ে দিবো গ্রামের বন্ধু বাড়িতে। 


তিনি ছেলেকে বললেন আমি তোমায় একজায়গায় নিয়ে যাবো। আমি কিন্তুু বাড়ীর ভিতরে ঢুকবো না। তুমি বাড়িতে ঢুকে দেখবে আদা পাকা একটি ঘর। সেই ঘরে ঢুকে দেখবে আমার মতো একজন খাটের মধ্যে শুয়ে আছে। 


তুমি গিয়ে সালাম দিবে দিয়ে উনার একবারে মূখের পাশে বসবে। বসে জিজ্ঞেস করবে চাচা আপনার শরীরে অবস্থা  এখন কেমন। নিশ্চয়ই উনি বলবে ভালো তখন তুমি বলবে  আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনার জন্য দোয়া করি এ জন্য এই অবস্থা। 


আবার জিজ্ঞেস করবে চাচা কোন ডাক্তারের কাছে   চিকিৎসা করাচ্ছেন। তিনি একজনের নাম বলবে তুমি বলবে উনি অনেক ভালো ডাক্তার উাকে দেখান। কিছুকণ পার আবার জিজ্ঞেস করবে চাচা ফলফ্রুট কি খাচ্ছেন। তিনি বলবেন এটা খাচ্ছি তুমি বলবে এটা খান এটা খুব ভালো শরীরের জন্য। এই বলে তুমি সালাম দিয়ে চলে আসবে। 


শহরের বন্ধু তার ছেলেকে নিয়ে গ্রামে গিয়ে ছেলেকে গ্রামের বন্ধুর বাড়ি দেখিয়ে দিয়ে বললেন আমি এখানে আছি তুমি যাও আমি যে ভাবে বলছি সে ভাবে তুমিও বলবে। ছেলে বাড়িতে ঢুকে দেখতে পায় একটি আদা পাকা ঘর। সে দৌড়ে গিয়ে ঐ ঘরে ঢুকে। 


ঢুকে দেখে তার বাবার মতো একজন মানুষ খাটের উপর শুয়ে আছে। সে তার মূখের সামনে বসে পড়ে। এমন ভাবে বসে উনার মূখ পুরো টা পিছনে রেখে । এবং মাঝে মাঝে পাদ মারতেছে। ঐ লোক রাগে শুধু ঠোঁট কামড়াচ্ছে। 


এমন সময় ছেলে বললো চাচা আপনার শরীর এখন কেমন ঐ লোক রাগেমেগে বললো না একটুও কমছে না। ছেলে বললো ভালো হইছে আপনি এভাবে যেন থাকেন আমি এই দোয়া করতেছি।


লোকটির রাগের পরিমাণ আরো একটু বাড়ছে। ছেলে আবার জিজ্ঞেস করলো চাচা ডাক্তার কারে দিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন। লোকটি বললো ডাক্তার ডাইরেক্ট  আজরাইল কে ধরছে। ছেলে বললো এইতো ঠিক আছে  উনি কুব ভালো ডাক্তার উনাকে দিয়ে চিকিৎসা করালে আপনার আরও কোন দিন অসুখ হবে না।


লোকটি শুধু ঠোঁট কামড়াচ্ছে আর রাগে সারা শরীর ঘামে ভিজে গেছে। কিছুকণ পর ছেলে আবার জিজ্ঞেস করলো চাচা ফলফ্রুট কি খাচ্ছেন। লোকটি রাগে বললো নদিস খাচ্ছি। ছেলে বললো এটা খান এটা খুব ভালো শরীরের জন্য উপকারী। 


এই বলার সাথে সাথে লোকটি লাফ দিয়ে উঠে বললো কুত্তার বাচ্চা দাড়া আজ তোর একদিন না হয় আমার একদিন। এই বলার সাথে সাথে ছেলে দিছে একটি দৌড় দৌড়ে গিয়ে তার বাবাকে সব বলার পর তার বাবা ছেলেকে বললেন বাবারে তুমি যে জান নিয়ে বেঁচে এসেছ এটাই তোমার জন্য মঙ্গল। আর বিয়ে করার দরকার নাই। 



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url